বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন – কালিকা পুরাণ

ঊননবতিতম অধ্যায় – বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন:  মুনিগণ বলিলেন;–ঔৰ্বমুনি সগর রাজার সমীপে যে সদাচার এবং রাজনীতি বর্ণন করিয়াছেন। তাহা আপনার মুখে শ্রবণ করিলাম। ১

বিষ্ণু-ধৰ্ম্মোত্তর-নামক শাস্ত্রে এই সকল বিষয় বিশেষরূপে বর্ণিত আছে এবং সদাচারসমূহও আপনার অনুগ্রহে জানিতে পারিব। ২

কিন্তু আমাদের অন্য একটা সংশয় আছে, আপনি পূর্বে তাহা অপনোদন করেন নাই। অতএব সম্প্রতি আমরা প্রশ্ন করিতেছি, সংশয় ছেদনপূর্বক আমাদের কৌতুক বর্ধন করুন। ৩

বেদবাক্যে এবং লোকতঃ শ্রুত হইয়া থাকে, পুত্রহীন ব্যক্তির গতি নাই। বেতাল এবং ভৈরব পূর্বে তপস্যার্থে পৰ্বত আশ্রয় করিয়াছিল। ৪

তৎপূর্বে তাহারা দারপরিগ্রহ করিয়াছিল, তাদের পুত্র ছিল না। তাহাদের পুত্র উৎপন্ন হয় নাই, কি হইয়াছিল–তাহাদের অবস্থার বিষয় বর্ণন করুন। ৫

মার্কণ্ডেয় বলিলেন-হে সাধুগণ! অপুত্রক ব্যক্তির গতি নাই, ইহা নিশ্চয়। নিজপুত্ৰ অথবা ভ্রাতৃপুত্র দ্বারাও সপুত্র বলিয়া পরিগণিত হয়। ৬

বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন - কালিকা পুরাণ

হে মহর্ষিগণ! বেতাল এবং ভৈরব মহাবলশালী ছিলেন এবং তাহাদের পুত্ৰ উৎপন্ন হইয়াছিল। বিশেষরূপে তাহাদের বংশ বৰ্ণন করিতেছি। ৭

বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন- কালিকা পুরাণ

বেতাল এবং ভৈরব যে কালে অভিমত সিদ্ধি লাভ করিয়া আনন্দ লাভ করিয়া আনন্দিতচিত্তে শিবমন্দির কৈলাসশিখরে গমন করে, হে দ্বিজগণ! সেইকালে মহাদেবের আজ্ঞায় পার্ষদপ্রবর নন্দী নির্জনে তাহাদিগকে শান্ত বাক্যে প্রবোধিত করিয়া বলিতে লাগলেন। ৮-৯

মহাদেবের আত্মজ আপনারা পুত্রহীন। পুত্রোৎপত্তির নিমিত্ত চেষ্টা করুন। পুত্র বা ব্যক্তি সর্বত্র সদগতি লাভ করে। ১০

পুত্রহীন ব্যক্তি পুন্নাম নরকে নিবাস করে। তপস্যা, যজ্ঞ এবং ধৰ্ম্মাদি দ্বারাও সেই নরক হইতে পরিত্রাণ পাইবার উপায়ান্তর নাই। ১১

কেবল পুত্রদ্বারাই পুন্নাম নরক হইতে মুক্তিলাভ হয়; অতএব আপনারা দেবযোনিতে নিজপুত্র উৎপাদনের প্রয়াস করুন। ১২

পৰ্বত-নন্দিনীর স্তন্য পানে আপনাদিগের মনুষ্যত্ব দূর হইয়াছে। কাত্যায়নীর পুত্র মনুষ্য হইতে পারে না। ১৩

অতএব আপনারা সুররমণীতে পুত্ৰ উৎপাদন করিয়া শীঘ্র মহাদেবের প্রিয় পাত্র হউন ১৪

মার্কণ্ডেয় বলিলেন,–বেতাল এবং ভৈরব নদীর বচনে আনন্দিত হইয়া বলিলেন, তোমার কথানুরূপ কাৰ্য করিবে। ১৫

তদনন্তর নিরন্তর নন্দীর বাক্য স্মরণপূর্বক তাহারা ইতস্তত সঞ্চরণ করিতে আরম্ভ করিলেন। ১৬

অনন্তর একদিন ভৈরব অপ্সরা-শ্রেষ্ঠা মনোহারিণী উৰ্বশীকে হিমালয় পর্বতের শিখরে দর্শন করিলেন। ১৭

কামাকৃষ্ট হইয়া উৰ্বশীর নিকট সুরতোৎসব প্রার্থনা করিলেন। সেও বেশ্যাভাবে সন্তুষ্টা হইয়া ইচ্ছানুরূপ আদেশ করিল। ১৮

বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন - কালিকা পুরাণ

তদনন্তর ভৈরবও তাহার অভিপ্রায় মতে তাহার সহিত সুরতক্ৰীড়া আরম্ভ করিলেন; এবং সন্তুষ্টা উৰ্বশীর সহিত বিহারে সন্তুষ্ট হইলেন। ১৯

তাঁহার রমণে সন্তুষ্টা উৰ্বশীর গর্ভে সূৰ্যসদৃশ বীৰ্যবান পুত্র সদ্যই উৎপন্ন হইল। ২০

উৰ্বশী সেই পুত্রকে ত্যাগ করিয়া স্বস্থানে প্রস্থান করিল, ভৈরবও সেই পুত্রটিকে গ্রহণ করিয়া নিজ স্থানে আগমন করিলেন। ২১

প্রমথগণশ্রেষ্ঠ ভৈরব আনন্দিতচিত্তে সেই পুত্রটির জাতসংস্কারাদি করত সুবেশ নামে তাহাকে আহ্বান করিতে লাগিলেন। ২২

অনন্তর চন্দ্র-সূর্যের ন্যায় কান্তিশালী সুবেশ বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া বিদ্যাধরগণের আধিপত্যে অভিষিক্ত হইলেন। ২৩

বিদ্যাধররাজ সুবেশ, গন্ধৰ্ব্বরাজ ধৃতরাষ্ট্রের পরম-সুন্দরী কন্যাকে বিবাহ করিলেন। ২৪

সেই কন্যার গর্ভে সুবেশের ঔরসে রুরু নামক পুত্ৰ উৎপন্ন হইল। রুরুর ঔরসে মেনকার গর্ভে বাহু নামে পুত্র উৎপন্ন হইল। ২৫

বাহুর–তপন, অঙ্গদ, ঈশ্বর এবং কুমুদ নামে চারিজন পুত্র জন্মে। তাহার মধ্যে পরম সুন্দর কুমুদ কনিষ্ঠ। ২৬

কুমুদের ঔরসে মহাবলশালী দেবসেন নামে এক পুত্র উৎপন্ন হয়। সুন্দর সেই দেবসেন পৃথিবীমণ্ডলে আগমন করত যৌবনাশ্ব মান্ধাতার কন্যা কোমলাঙ্গী অপ্সরাসদৃশী কেশিনীর সহিত নিরন্তর রমণ করিতে লাগিলেন। ২৭-২৮

যৌবনাশ্ব মান্ধাতা স্বীয় কন্যা কেশিনীকে ইন্দ্রের কথা অনুসারে দেবসেনের হস্তে প্রদান করিলেন। ২৯

দেবসেন, যথাবিধি কেশিনীর পাণিগ্রহণ করিয়া হরনগরী কাশীধামে তাঁহার সহিত দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা করিতে আরম্ভ করিলেন। ৩০

পশুপতি তাঁহার তপস্যায় সন্তুষ্ট হইয়া অভিমত বরদানের নিমিত্ত সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন। ৩১

দেবসেন তাঁহার নিকট অভিলষিত বরত্রয় প্রার্থনা করিলেন। যতকাল পর্যন্ত প্রভাকর নিজ প্রভা বিস্তার করিবেন, ততদিন পর্যন্ত আমার বংশীয় রাজগণ কাশীপুরের অধিপতি হইবে এবং আপনিও আমার বংশে প্রসন্ন থাকিবেন। ৩২

মহামতি দেবসেন মহাদেবের নিকট এই বর প্রার্থনা করিয়া, তাঁহার অনুগ্রহে বহুকাল পর্যন্ত কাশীর আধিপত্য করিলেন। ৩৩

অনন্তর, দেবসেন কেশিনীর গভে সাতটি পুত্ৰ উৎপন্ন করেন, তাহাদের নাম এবং কীর্তি শ্রবণ কর। ৩৪

সুমনা, বসুদান, ঋতধৃক, যবন, কৃতী, নীল এবং বিবেকী এই সকল দেবসেনতনয় সৰ্ব্বশাস্ত্রবিশারদ বংশবর্ধক এবং সংশীল। ৩৫-৩৬

অনন্তর দেবসেন, যথাসময়ে পুত্ৰসকলের প্রতি রাজ্যভার সমৰ্পণ করিয়া ভাৰ্যার সহিত বিদ্যাধরলোকে গমন করিলেন। অনন্তর দেবসেনের পুত্রগণ জ্যেষ্ঠভ্রাতা সুমনাকে রাজসিংহাসনে সংস্থাপিত করিয়া, তাঁহার অনুগত হইয়া রাজলক্ষ্মী ভোগ করিতে লাগিলেন। ৩৭-৩৮

সুমনার শাস্ত্রাৰ্থ-বিশারদ মহা-বলশালী বীর সুমতি, বিরূপ এবং সত্য নামে তিনটি পুত্ৰ উৎপন্ন হইল। ৩১

সুমতির কল্প নামে এবং সত্যের ডিণ্ডিম নামে পুত্র হয়, তাহাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কল্প, সিংহাসনে উপবেশন করে। ৪০

বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন - কালিকা পুরাণ

কল্পের বিজয় নামে এক পুত্র হয়। বিজয় সমস্ত পৃথিবীমণ্ডল এবং মহাবল নৃপমণ্ডলকে জয় করেন। কল্পপুত্র বিজয় ইন্দ্রের আদেশে খাণ্ডব নামে শত যোজন বিস্তৃত বন নির্মাণ করেন। ৪১-৪২

এই বনকে পাণ্ডুপুত্র মহাবল অৰ্জ্জুন হুতাশনের সন্তোষ সাধনের নিমিত্ত দগ্ধ করেন। ৪৩

ঋষিগণ বলিলেন,–হে তপোধন! বিজয় কি নিমিত্ত শত যোজন পরিমাণে খাণ্ডব বন নির্মাণ করিয়াছিলেন? সেই বিষয় এবণ করিতে ইচ্ছা করি। আমাদিগের নিকট বর্ণন করুন। ৪৪

মার্কণ্ডেয় বলিলেন,–চন্দ্রবংশে মহাত্মা মহাবল ধীর সুন্দর এবং প্রতাপবান সুদর্শন নামে নৃপতি হইয়াছিলেন। ৪৫

মুনিগণ! মহাবল শিবভক্ত সুদর্শন রাজা হিমালয় পর্বতের সমীপে হিংস্র সিংহবাঘ্ৰসমূহকে দূরীভূত করিয়াছিলেন। ৪৬

ত্রিংশৎ যোজন পরিমাণে বিস্তৃত ও শত যোজন দীর্ঘ খাণ্ডবী নামে নগরী নিৰ্মাণ করিয়াছিলেন। ৪৭

উন্নত প্রাকারমণ্ডলপরিবৃত সেই নগর উন্নত অট্টালিকা পঙক্তিদ্বারা বিরাজিত হইয়াছিল। নিম্ন এবং উন্নত পরিখা সেই নগরের চতুষ্পার্শে পরিবৃত থাকিত। ৪৮

সেইজন্য বিপক্ষীয় সৈন্যের প্রবেশ করিবার সাধ্য ছিল না এবং তথায় নানা প্রকার মনুষ্য সর্বদা অধিষ্ঠান করিত। দীর্ঘিকা, বহুতর উপবন, সরোবর এবং উন্নত মনুষ্যগণ সর্বদা মহানন্দে অধিষ্ঠান করিত। ৪৯

তাহারা স্বর্গস্থিত দেবগণের সহিত অতুল ঐশ্বর্যে এবং অনন্ত আনন্দে স্পর্ধা করিত। ৫০

সুদর্শন রাজা ভূমি বিদারণ করিয়া কনখলা নামে প্রসিদ্ধা গঙ্গাদেবীকে খাণ্ডবীপুরে প্রবাহিত করিয়াছিলেন। ৫১

এ উক্ত নদী খাণ্ডবীর মধ্য দিয়া খাতপথে উত্তাল তরঙ্গলেখায় উক্ত নগরীকে সিক্ত করিয়া সীতানাম্নী নদীর সহিত মিশ্রিত হইয়াছেন। ৫২

রাজা সুদর্শন অনেক অনেক পৃথিবীপতিগণকে জয় করিয়া প্রচুর পরিমাণে অর্থ সঞ্চয় করিলেন। অনেক অনেক রত্নরাশিতে খাণ্ডবী নগরী মণ্ডিত করিলেন। ৫৩

পৃধিবীপতি সুদর্শন, অন্যান্য নরপতিগণের রাজ্য হইতে প্রজাগণকে আনয়ন করত নিজ নগরে স্থাপিত করিলেন। ৫৪

রাজা সুদর্শন যুদ্ধে দেব, দানব ও গন্ধর্বদিগকে জয় করিয়া দেববৃক্ষ, দেবরত্ন ও দৈবী ঔষধি বৃক্ষ আনিয়া খাণ্ডববনে রোপণ করাইয়াছিলেন। ৫৫

দেব এবং মনুষ্যগণের অপকারকারী সুদর্শনের সমৃদ্ধি দর্শন করিয়া বিজয় নরপতি তাহার অনিষ্ট চেষ্টা অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। ৫৬

বারাণসীর ঈশ্বর বিজয় রাজা সুদর্শনের সহিত সন্ধি করিয়া তাহাকে মন্ত্রি পদে প্রতিষ্ঠিত করিলেন। ৫৭

অনন্তর মহাবলশালী বিজয়, ছিদ্রান্বেষণ-পর হইয়া কোনছলে সুদর্শনকে আক্ৰমণ করিলেন। ৫৮

সুদর্শন, বিজয়ের গতিরোধার্থ চতুরঙ্গ-বলের সহিত সমরাভিমুখ হইলেন।

বিজয় নরপতি চতুরঙ্গসৈন্যের সহিত রথে আরোহণ করত সুদর্শনের সহিত সুস্থচিত্তে মুদ্ধযাত্রা করিলেন। ৫৯-৬০

পূৰ্ব্বে ইন্দ্র এবং বৃত্রাসুরে যে প্রকার অদ্ভুত যুদ্ধ হইয়াছিল, সেই প্রকার মহাত্মা বিজয় এবং সুদর্শনের তুমুল সংগ্রাম উপস্থিত হইল। ৬১

সুদর্শন নৃপতির সেনাধ্যক্ষ রুমণ্বান্ সুবর্ণরথে আরোহণ করত মহাবেগে বিজয় রাজের সম্মুখে উপস্থিত হইল। ৬২

বিজয় রাজার অস্ত্রধারিণী সাত অক্ষৌহিণী সেনা চতুর্দিক পরিবৃত করিয়া ক্রোধান্ধ শত্রুসেনাকে আক্রমণ করিল। ৬৩

বিজয় রাজার সেনাপতি রিপুঞ্জয় সঞ্জয়, সেনার সহিত সেনাপতি রুমণ্বানকে গ্রহণ করিল। সেনাপতিদ্বয়ের পরস্পর মহাবলে বিপুল যুদ্ধ হইল। রুমণ্বান সঞ্জয়ের প্রতি শর বৰ্ষণ করিতে লাগিল। ৬৪-৬৫

সিংহ যে প্রকার গজরাজকে দর্শন করত তুমুল শব্দ করে, রুমণ্বান্ সেই প্রকার ঘোর শব্দ করিয়া বিংশতি বাণে সঞ্জয়কে বিদ্ধ করিল এবং যুদ্ধকুশল রুমণ্বান্ অৰ্দ্ধচন্দ্র বাণে সঙ্গয়ের ধনুক ছেদন করিল। ৬৬

সঞ্জয়ও অন্য ধনুক গ্রহণ করত তিন বাণে রুমন্বানকে বিদ্ধ করিল এবং ভল্ল অস্ত্রে ধনুক ছেদন করিল। ৬৭

সঞ্জয় রুমণ্বানের আট শত হস্তী, পাঁচ ছয় হাজার পদাতিক এবং তিন হাজার অশ্ব তীক্ষ্ণ বাণ বর্ষণে ছেদন করিল। ৬৮

রুমণ্বান অতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া অন্য ধনুকে ভল্লাস্ত্র সংযোজিত করিয়া সঞ্জয় সারথির মস্তক দেহ হইতে পাতিত করিলেন। ৬৯

বাণচতুষ্টয়ে ঘোটক-চতুষ্টয়কে যমভবনে প্রেরণ করিয়া, পাঁচ বাণে সঞ্জয়কে বিদ্ধ করিল। ৭০

সঞ্জয়ও তৎক্ষণে রথ হইতে অবতরণ করত এক গদা গ্রহণপূর্বক রুমণ্বানের পশ্চাতে ধাবন করিতে লাগিল। ৭১

সমর-প্রবীণ রুমণ্বান পশ্চাদধাবী সঞ্জয়কে শীঘ্রই বাণবর্ষণে আচ্ছাদিত করিয়া নিবারিত করিলেন। ৭২

সিংহ যে প্রকার মদমত্ত মাতঙ্গের সঙ্গে সংগ্রাম করে, সেইরূপ রিপুঞ্জয় সঞ্জয়ও প্রচণ্ড গদার ভ্রামণে বাণবর্ষণ নিবারিত করিয়া রুমণ্বানের সমীপে উপস্থিত হইলেন। ৭৩

সঞ্জয় দুর্জয় গদা ভ্রামণ করত একবার প্রহারে রথের সহিত রুমণ্বানকে ভূমিসাৎ করিল। ৭৪

রুমণ্বান গদাঘাতে বন-মধ্যস্থিত উন্নত শালবৃক্ষ যে প্রকার বজ্রাঘাতে নিপতিত হয়, তদ্রূপ পৃথিবী মধ্যে পতিত হইল। ৭৫

সুদর্শন রাজা রুমণ্বানকে পতিত দর্শন করিয়া ধূমমুক্ত বহ্নির ন্যায় শোক এবং ক্রোধে প্রজ্জ্বলিত হইলেন। ৭৬

এবং শোকাকুল হইয়াও ক্রোধবশে বেগবান্ অশ্বযুক্ত ব্যাঘ্রচর্ম-পরিবৃত, সুবর্ণ দ্বারা চিত্রিত এরং সিংহধ্বজযুক্ত রথে আরোহণকরত বার বার কার্মুক বিস্ফারিত করিয়া বেগে সসৈন্য সঞ্জয়ের প্রতি ধাবমান হইলেন। ৭৭-৭৯

মৃগরাজ সিংহ যে প্রকার ক্ষুদ্র মৃগসমূহকে অবলীলাক্রমে বিনাশিত করে, সেই প্রকার সুদর্শনও নিশিত শস্ত্রসমূহ দ্বারা শত্রুসৈন্য ছিন্ন-ভিন্ন করিলেন। ৮০

তিমিরহারী সূৰ্য্য যে প্রকার অন্ধকার নাশ করেন, রাজাও সেইরূপ দুই ক্রোশ অগ্রগামিণী মহাবল এক অক্ষৌহিণী সেনা বিনষ্ট করিলেন। ৮১

এই প্রকারে এক অক্ষৌহিণী সেন নাশ করিয়া একাকী সঞ্জয়ের সমীপে উপস্থিত হইয়া ছয় বাণে তাহাকে বিদ্ধ করিলেন। ৮২

এবং এক বাণে রথধ্বজ ছিন্ন করিলেন। সমরকুশল সঞ্জয়ও বিংশতি বাণে সুদর্শনকে বিদ্ধ করিয়া এক বাণে তাঁহার ললাট ভেদ করিলেন। ৮৩

অর্ধচন্দ্রবাণে সুদর্শনের ধনুক ছেদন করিয়া দশবাণ দ্বারা সারথিকে বিদ্ধ করিলেন। ৮৪

তদনন্তর সুদর্শন রাজা অন্য ধনুক গ্রহণ করত ভয়ানক শরবর্ষণ দ্বারা সঞ্জয়কে ব্যাকুল করিলেন। ৮৫

পূৰ্বে যে প্রকার ইন্দ্র ও দৈত্যেন্দ্র বলির পরস্পর তুমুল সংগ্রাম হইয়াছিল, সেই প্রকার সৰ্ববিস্ময় সুদর্শন এবং সঞ্জয়ের সংগ্রাম হইতে লাগিল। ৮৬

তদনন্তর, সুদর্শন রাজা, সুতীক্ষ অস্ত্রে সঞ্জয়ের ধনু ছেদন করিলেন। শাণিত শস্ত্রদ্বারা সারথিকে বিদ্ধ করিলেন। ৮৭

এবং বাণদ্বারা ঘোটকচতুষ্টয়কে যমভবনে প্রেরণ করিলেন। ধনুক ছিন্ন করিয়া তাহাকেও বিদ্ধ করিলেন। তদনন্তর সঞ্জয় ধনু এবং রথ বিনষ্ট হইলে অবনীতে অবতরণ করিয়া খড়গ এবং চর্ম গ্রহণপূৰ্ব্বক সুদর্শন রাজার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। সুদর্শন রাজা, সঞ্জয়কে ক্রোধভরে মহাবেগে আগমন করিতে দেখিয়া অর্ধচন্দ্র বাণে খড়্গ এবং ভল্ল দ্বারা চর্মচ্ছেদন করিলেন। ৮৮-৯২

সুদর্শন সারথি বেগে আগমন করত উৎকৃষ্ট সঞ্জয়রথ হস্ত দ্বারা তূতলসাৎ করিল। ৯৩

সুদর্শন খড়্গদ্বারা রথ-সমীপগত সঞ্জয়ের মস্তকচ্ছেদন করিলেন। সঞ্জয়ও ছিন্ন মস্তক হইয়া পৃথিবীতে পতিত হইল। ৯৪

কানন-মধ্যে কুঠার দ্বারা ছিন্ন কুসুমিত শালবৃক্ষ পতিত হইলে যে প্রকার হয়, সঞ্জয়ও সুদর্শন রাজার খড়্গে ছিন্ন হইয়া সেইরূপ হইয়াছিল। ৯৫

বিজয়রাজা সঞ্জয়কে শত্রুশরে পতিত দেখিয়া ক্রোধভরে শঙ্খনাদ দ্বারা গগন মণ্ডল শব্দিত করত স্বর্ণ-চিত্রিত ব্যাঘ্র-চৰ্ম্ম-শোভিত অর্ধযোজন বিস্তৃত কেতুবিশিষ্ট রথের রবে দশদিক্‌ নিনাদিত করিয়া বাণ বর্ষণ করিতে করিতে সুদর্শনের সমীপে উপস্থিত হইলেন। ৯৬-৯৮

শত্রু-জয়কারী বিজয় রাজ সুদর্শনের সমীপে উপস্থিত হইয়া তিন বাণে তাঁহার হৃদয় বিদ্ধ করত ‘স্থির হও ভঙ্গ দিও না’ এই কথা বলিলেন। ৯৯

সুদর্শনও হস্তীর ন্যায় শব্দ করিতে লাগিলে বিজয় রাজা দশবাণে বিদ্ধ করিয়া তাঁহার ধনুশ্ছেদন করিলেন। ১০০

সুদর্শন রাজা তিনবাণে বিজয় নৃপতির ধনু ছেদন ও তাহাকে বিদ্ধ করিয়া সিংহসদৃশ ভয়ানক নিনাদ করিলেন। ১০১

বিজয় অপর ধনুক গ্রহণ করত কঙ্ক পত্ৰশোভিত তিন শর দ্বারা সুদর্শনের হৃদয় বিদ্ধ করিলেন এবং তদনন্তর বিজয় রাজা সুদর্শনের উদ্দেশে জাজ্বল্যমান কোপবশে সকল বস্তুকে যেন গ্রাস করিতে উদ্যত অনুপম সুবর্ণ দণ্ড শোভিত সুতীক্ষ্ণ তৈমধৌত এবং সুনির্মল নাগকন্যা শক্তি নিক্ষেপ করিলেন। ১০২-১০৪

হে দ্বিজগণ! সুদর্শন, তাহার আঘাতে ব্যাকুল হইয়া রথসমীপে উপবেশন করিলেন। ১০৫

এবং বিজয় সুদর্শন মূর্ছিত হইলে তাঁহার সম্মুখ এবং পার্শ্ববর্তী সৈন্যসমূহকে কিঞ্চিৎ কালের মধ্যেই যমালয়ে প্রেরণ করিলেন। ১০৬

দশ সহস্র হস্তী, পঞ্চবিংশতি সহস্র বেগবান্ অশ্ব, দুই লক্ষ পদাতি তৎক্ষণাৎ নিহত করিলেন। ১০৭

তদনন্তর সুদর্শন সংজ্ঞা লাভ করিয়া দৃঢ়তর ধনুগ্রহণপূর্বক বিজয়ের প্রতি বাণ বৰ্ষণ করিতে লাগিলেন। ১০৮

সুদর্শন, বিজয়ের প্রতি শর বর্ষণ করত ভল্ল দ্বারা তাঁহার ধনুশ্ছেদন করিলেন। ১০৯

বেতাল ভৈরব বংশকীৰ্ত্তন - কালিকা পুরাণ

ভল্ল দ্বারা সারথির মস্তকচ্ছেদন করিলেন এবং অশ্বচতুষ্টয়ও নষ্ট করিলেন। অনন্তর সুদর্শন রাজা, রথশূন্য বিজয় নরপতিকে কঙ্কপত্রবিশিষ্ট দশ বাণদ্বারা বিদ্ধ করিয়া উচ্চৈঃস্বরে নাদ করিলেন। ১১০-১১১

বিজয়, বিজয় আকাঙ্ক্ষায় রথ এবং ধনুঃ শূন্য হইয়া মহাবেগে গদা গ্রহণ পূর্বক সুদর্শনের প্রতি ধাবমান হইলেন। ১১২

বর্ষাকালীন বারিধর যে প্রকার ভূধরের উপর বারিবর্ষণ করেন, সেইপ্রকার সুদর্শনও বেগে আগত বিজয় রাজার প্রতি বাণ বর্ষণ করিতে লাগিলেন। ১১৩

বিজয় রাজা গদা ভ্রামণদ্বারা সুদর্শনের শরবৃষ্টিকে আচ্ছাদিত করিয়া রথারূঢ় সুদর্শনের সমীপে উপস্থিত হইলেন। ১১৪

অনন্তর বিজয় মহাবল সুদর্শনের সমীপে উপস্থিত হইয়া গদাদ্বারা তাঁহার মস্তকে আঘাত করিয়া ভূতলে নিক্ষেপ করিলেন। ১১৫

বজ্ৰপাণির বজ্রাঘাতে যে প্রকার গিরিশিখর চুর্ণ হয়, সেই প্রকার সুদর্শন গদাঘাতে আহত হইয়া নিপতিত হইলেন। ১১৬

সুদর্শন, সমরে প্রাণত্যাগ করিলে সেনাপতিগণ সেনার সহিত চতুর্দিকে ধাবমান হইল। ১১৭

বিজয় রাজা, সেনার সহিত সুদর্শন নিহত হইলে খাণ্ডবী পুরে প্রবিষ্ট হইয়া পৰ্বতের ন্যায় রাশি রাশি পরিমাণে অনেক সুবর্ণ এবং রত্নসমূহ দর্শন করিলেন। সেই নগরে প্রফুল্ল কমলাদি কুসুমসমূহে বিরাজিত। ১১৮-১১৯

হংস কারণ্ডব প্রভৃতি নানাপ্রকার জলচর জন্তুসমূহে সকল দিকে পরিপূর্ণ সরোবরসমূহও দর্শন করিলেন। ১২০

বিজয় রাজা পর্বতের ন্যায় রাশি রাশি স্বর্ণ এবং রত্নসমূহ, প্রফুল্ল পুষ্পসমূহে বিভূষিত ভ্রমরগণের গুন্ গুন্ শব্দে গুঞ্জরিত। মন্দরাদি দেব-বৃক্ষ, সুধা-ধবল কৈলাস-সদৃশ বৃহৎ বৃহৎ গৃহ, উচ্চ হস্তী এবং প্রতি গৃহস্থিত সুগন্ধ পুষ্পশোভিত উদ্যান প্রভৃতি দ্বারা অমরাবতী-সদৃশ শক্তনগরী দর্শন করিয়া আনন্দে উৎফুল্ল নয়ন হইয়াছিলেন। ১২১-১২২

তিনি আশ্চৰ্য্য নগরশোভা দর্শন করিয়া বিবেচনা করিয়াছিলেন, অমরাবতী এই পুরীরূপে স্বর্গ হইতে আগমন করত পৃথিবী নিবাস করিতেছেন। ১২৩

দেবরাজ ইন্দ্র আগমন করত নগরশোভা দর্শনে বিস্মিত বিজয়রাজকে সান্ত্বনাপূর্বক মনোহর বাক্য বলিতে লাগিলেন। ১২৪

হে রাজন! সুদর্শন নৃপতি, দেব নর গন্ধর্ব যক্ষ এবং মুনিগণের মনোহর নিবাসস্থান উৎসারিত করিয়া নিরন্তর আমার অপ্রিয় আচরণ করিত এবং অতি সুগোপ্য তপোবনকে ভগ্ন করিয়া খাণ্ডবী নামে নগর নির্মাণ করিয়াছে। ১২৫-১২৬

হে নরাধিপ! অতএব তুমি পুনর্বার পূর্ববৎ বন নির্মাণ কর। ঐ বনে নির্জনে তক্ষকের সহিত বিহার করিব। ১২৭

হে পৃধিবীপতে! তোমার অনুগ্রহে মুনিগণেরও রমণীয় তপস্যা স্থান হইবে এবং কিন্নর গন্ধৰ্ব্ব প্রভৃতিরও ক্রীড়াস্থান হইবে। ১২৮

মার্কণ্ডেয় বলিলেন,–বিজয়রাজ এই প্রকার ইন্দ্রের বাক্য শ্রবণ করিয়া তাঁহার গৌরববর্ধনের নিমিত্ত খাণ্ডবী নগরীকে বনরূপে পরিণত করিলেন। ১২৯

নগরবাসী প্রজাগণকে বলিলেন,–প্রজাগণ! তোমরা ইচ্ছানুরূপ ইচ্ছামত স্থানে প্রস্থান কর। তোমাদের যদি ইচ্ছা হয়, তাহা হইলে আমার ভূজবলে পরিপালিত বারাণসী নগরে গমন কর। ১৩০-১৩১

তদনন্তর প্রজাগণ তাঁহার বাক্য শ্রবণ করত তাঁহার বাহুবলে পরিপালিত বারাণসী নগরে গমন করিল। ১৩২

বিজয় নৃপতিও সেই সকল ধনরত্নরাশি সূবর্ন রূপ্য এবং অশ্বসমূহ পৃথক পৃথক রূপে নৌকাদ্বারা নিজ নগরী বারাণসীতে উপস্থাপিত করিলেন। ১৩৩

সুদর্শন, বাহুবলে দেব এবং গন্ধৰ্বাদির যে সকল রত্নাদি দ্রব্যসমূহ আহরণ করিয়াছিল, বিজয় তাহাদিগকে সেই সকল দ্রব্যের প্রত্যর্পণে প্রসন্ন করলেন। ১৩৪

তাহারাও আনন্দিত-চিত্তে নিজ নিজ দ্রব্য গ্রহণপূর্বক খাণ্ডবী হইতে স্বস্থানে গমন করিলেন। ১৩৫

শত যোজন পরিমাণ দীর্ঘ এবং ত্রিংশং যোজন পরিমাণে বিস্তৃত সেই নগর পূৰ্ববৎ বনরূপে পরিণত হইল। ১৩৬

ইন্দ্রের অনুমতি অনুসারে তক্ষক নিজগণের সহিত সেই বনে বহুকাল নিবাস করিল এবং বন জনশূন্য হইল। ১৩৭

সেই বনে দেবগণ গন্ধৰ্ব্বগণ এবং অপ্সরোগণ বিজয় রাজার জয় প্রার্থনা করিয়া সুখে ক্রীড়া করিতে লাগিলেন। ১৩৮

অষ্টাবিংশ দ্বাপরযুগে বহ্নিদেব ভিক্ষুকরূপে অৰ্জ্জুনের নিকট প্রার্থনা করিলেন। ১৩৯

অৰ্জ্জুন অঙ্গীকৃত পরিপালনের নিমিত্ত প্রতিজ্ঞা করিলেন। অনন্তর অগ্নিদেব নিজরূপ ধারণ করত অর্জুনকে সম্বোধনপূর্বক বলিলেন। ১৪০

পার্থ! আমি স্বয়ং অগ্নি, যজ্ঞে অতিশয় ভোজন করিয়া ব্যাধিগ্রস্ত হইয়াছি, অতএব তুমি আমার ব্যাধি নিবারণ কর। ১৪১

হে অর্জুন! পক্ষী, রাক্ষস এবং মৃগ প্রভৃতি নানাপ্রকার জন্তুপূর্ণ খাণ্ডব নামে নগর আছে, সেই বন যদি আমাকে ভোজন করাইতে পার, তাহা হইছে অদ্যই আমি অনন্ত ব্যাধি যন্ত্রণা হইতে মুক্তি লাভ করি। ১৪২

পূর্বে বিজয় রাজা খাণ্ডবী নামক নগর ভগ্ন করিয়া বন নিৰ্মাণ করায় উক্ত বন খাণ্ডবনামে প্রসিদ্ধ। ১৪৩

কিন্তু দেবেন্দ্র সেই বনের রক্ষক। অতএব আমি স্বয়ং অন্য সাহায্য ব্যতিরেকে তাঁহার সহিত বিরোধ করিতে সমর্থ হইব না। ১৪৪

হে মহাত্মন! অতএব তুমি অনুগ্রহপূর্বক আমার সাহায্য করিলে আমি নিঃশঙ্কচিত্তে সেই বন ভোজন করিয়া ব্যাধি-মুক্ত হই। ১৪৫

বহ্নিদেবের এই বাক্য শ্রবণ করত মহাবল অৰ্জ্জুন সকল প্রকার প্রাণিযুক্ত সেই বনকে দগ্ধ করিলেন। ১৪৬

অর্জুন অগ্নিদেবের হিতকামনায় দেবকীতনয় বাসুদেবের সাহায্যে খাণ্ডব বন দাহনে প্রবৃত্ত হইলেন। ১৪৭

বহ্নিদেব অর্জুনের বলে খাণ্ডব ভোজন করিয়া আনন্দিত চিত্তে বরস্বরূপ বরুণদেব নিৰ্মিত গাণ্ডীবধনুঃ প্রদান করিলেন। ১৪৮

অগ্নিদেব, অক্ষয়তূণীর রৌপ্যাভ অশ্বচতুষ্টয়যুক্ত হনূমদধিষ্ঠিত রথ এবং সুতীক্ষ্ণ খড়্গ অর্জুনকে প্রদান করিলেন। ১৪৯

তিনি তাঁহার অনুগ্রহে রোগশূন্য হইলেন ৷ অৰ্জ্জুন অক্ষয়বাণপূর্ণ তূণ, গাণ্ডীবধনু, খড়্গ এবং বানরধ্বজ ঘোটক-চতুষ্টয়যুক্ত রথ দ্বারা অমরদুর্জয় অজেয় রিপুকুল জয় করিয়াছিলেন। ১৫০

এই প্রকারে ভৈরবীর বংশে মহাকৃতী বিজয় জন্মগ্রহণ করত খাণ্ডববন নির্মাণ করেন। ১৫১

রাজন! বিজয়ের ত্রয়োদশ জন মহাবল পরাক্রান্ত পুত্র হয়; তাহাদিগের নাম–দ্যুতিমান, সৌম্যদর্শী, ভূরি, প্রদ্যুম্ন, ক্রতু, তুণ্ড, বিরূপাক্ষ, বিক্রান্ত, ধনঞ্জয়, প্রহর্ষ, প্রণব, কেতু এবং উপরিচর। ১৫২-১৫৩

কনিষ্ঠ উপরিচরই ইহাদিগের মধ্যে রাজা হন। ইনি বারাণসী নগরীতে একলক্ষ যজ্ঞ করিয়াছিলেন। ১৫৪

পৃথিবীতে এই মহাভাগ উপরিচর রাজা ভিন্ন আর কেহই একলক্ষ যজ্ঞ করেন নাই, করিবেনও না। ১৫৫

ইহাদিগের পুত্র-পৌত্রে সমস্ত জগৎ ব্যাপ্ত হইয়াছে। মাদৃশ কোন ব্যক্তিই বহুকালেও তাহাদিগের সংখ্যা করিতে পারে না। ১৫৬-১৫৭

হে ব্রাহ্মণগণ! এই আমি ভৈরবের বংশবিবরণ কীৰ্ত্তন করিলাম, এই বংশচরিত শ্রবণ করিলে মনুষ্য অপুত্র হয় না। ১৫৮

যে ব্যক্তি এই পবিত্র বিজয়চরিত শ্রবণ করে, তাহার সর্বদা জয় হয়, পরাভব হয় না। ১৫৯

যে ব্যক্তি একাগ্রচিত্তে এই উত্তম বিবরণ শ্রবণ করিবে, কদাচ তাহার বংশ বিচ্ছেদ হইবে না। ১৬০

ঊননবতিতম অধ্যায় সমাপ্ত। ৮৯

আরও পড়ুনঃ

নৈর্ঋতাদিভাগের নির্ণয় – কালিকা পুরাণ

 কালিকা পুরাণ

Leave a Comment