মানুষের জীবনে নানান গুণ আছে, তবে তার মধ্যে কিছু গুণ মানুষকে মহত্ত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। মহানুভবতা এবং নীতিজ্ঞান ঠিক তেমনই দুটি অনন্য গুণ। মহানুভবতা মানে হলো বিরাট হৃদয়— এমন এক উদারতা, যা শত্রুর প্রতিও সদয় হতে শেখায়। অন্যদিকে নীতিজ্ঞান মানুষকে সঠিক-ভুলের পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করে এবং তাকে মানবিকতার পথে পরিচালিত করে।
প্রাচীন ঋষি ও মহাজনেরা তাঁদের জীবনদর্শনে দেখিয়েছেন, কেমন করে মহানুভবতা ক্ষুদ্রতা ও হীনতার ঊর্ধ্বে তুলে ধরে মানুষকে মহত্ত্ব দান করে। আবার নীতিজ্ঞান মানুষকে শুধু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতেই শেখায় না, বরং সমাজ ও জীবজগতের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার পথও নির্দেশ করে।
আজকের আলোচনায় আমরা দেখব— কেমন করে মহানুভবতা মানুষের মধ্যে অসীম প্রেম, ক্ষমাশীলতা ও উদারতার জন্ম দেয়; এবং কেমন করে নীতিজ্ঞান মানুষকে সত্য, সুন্দর ও শুভের পথে চালিত করে। পৌরাণিক উপাখ্যান ও দৃষ্টান্তের আলোকে এই দুটি গুণের মাহাত্ম্য অন্বেষণ করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
Table of Contents
মহানুভবতা নীতিজ্ঞান
মহানুভবতা নীতিজ্ঞান
‘মহানুভবতা’ মানুষের একটি গুণ। ‘মহানুভবতা’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে অনুভবের বিরাটত্ব বা উদারতা। অনেক বড় মন দিয়ে সকলের প্রতি, এমন কি শত্রুর প্রতিও ভাল আচরণ করার গুণকে বলা হয় মহানুভবতা। যিনি মহানুভব তাঁর হৃদয় অনেক বড়। উদার তাঁর চরিত্র। আর “উদারচরিতানাং তু বসুধৈব কুটুম্বকম্’। অর্থাৎ যিনি উদার চরিত্রের অধিকারী গোটা পৃথিবীই তাঁর আত্মীয়। অর্থাৎ পৃথিবীই সকলের তাঁর আপন, কেউ তাঁর পর নয় ।
যিনি সকল প্রকার ক্ষুদ্রতা, নীচতা, হীনতা, স্বার্থপরতা, সংকীর্ণতা ও সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন, তিনিই মহানুভব। মহানুভবতা জীবকে ভালবাসার প্রেরণা যোগায়। আর ‘যত্র জীবঃ তত্র শিবঃ’- যেখানে জীব সেখানেই ঈশ্বরের অবস্থান । ঈশ্বর আত্মারূপে জীবের হৃদয়ে বিরাজ করেন। তাই মহানুভবতা দিয়ে জীবকে আপন করে নিলে ঈশ্বরকে আপন করা হয় ।
তাই মহানুভবতা ধর্মেরও অঙ্গ। মহানুভবতা থেকে জীবপ্রেম ও ঈশ্বর ভক্তি দুইই জাগ্রত হয়। যিনি মহানুভব, তাঁর কাছে সকলেই আপন। যে তার শত্রুতা করছে, তাকেও তিনি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন । মহানুভবতা সম্পর্কে একটি পৌরাণিক উপাখ্যান বলছি :
বশিষ্ঠের মহানুভবতা
অনেক অনেক কাল আগে বশিষ্ঠ নামে এক ব্রহ্মর্ষি ছিলেন। ব্রহ্মর্ষি মানে হল ব্রাহ্মণ ঋষি। অসাধারণ ছিল তাঁর সাধনার বল। বশিষ্ঠ ছিলেন মহানুভব। একবার অনাবৃষ্টি হয়েছিল। দেখা দিয়েছিল দুর্ভিক্ষ। সে সময়ে যোগবলে বহু লোকের আহারের ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন। একই সময়ে আরেকজন ঋষি ছিলেন। তাঁর নাম বিশ্বামিত্র। বিশ্বামিত্র ছিলেন ক্ষত্রিয় বর্ণের এবং একজন রাজা।
কিন্তু রাজা হয়েও তিনি সাধনার দ্বারা ঋষিত্ব লাভ করেছিলেন। এ জন্যে লোকে তাঁকে রাজর্ষি বলত। রাজর্ষি হয়েও তৃপ্ত নন বিশ্বামিত্র। তিনি ব্রহ্মর্ষি হতে চান। ক্ষত্রিয় হলেও সাধনার বলে হতে চান ব্রাহ্মণ এবং ব্রহ্মর্ষি। কিন্তু তার উপযুক্ত ব্যক্তির জন্য স্বীকৃতির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি হলেন সূর্যবংশের কুলগুরু ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠ।
যদি তিনি বিশ্বামিত্রকে ব্রহ্মর্ষি বলে মেনে নেন, তাহলে কেউ তাঁকে ব্রহ্মর্ষি বলে মেনে নিতে দ্বিধা করবে না। বশিষ্ঠ এই স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। তিনি বিশ্বমিত্রকে মেনে নিচ্ছেন না ব্রহ্মর্ষি বলে। কারণ তখনও বিশ্বামিত্র ব্রহ্মর্ষির সমগ্র গুণাবলি অর্জন করেন নি। এ জন্যে বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠের ওপর খুব রেগে আছেন । তিনি বুদ্ধি আঁটলেন, বশিষ্ঠের ক্ষতি করবেন, যাতে বশিষ্ঠ কষ্ট পান ।
একদিন মন্ত্রবলে এক রাজাকে রাক্ষসে পরিণত করলেন। তারপর তাকে বললেন- ওহে রাক্ষস, তুমি এখুনি যাও। বশিষ্ঠের এক’শ ছেলে আছে। তাদের ভক্ষণ করে এস। বিশ্বামিত্রের আদেশ পেয়ে রাক্ষস ছুটে গিয়ে তা পালন করে এল। এতেও বশিষ্ঠ বিশ্বামিত্রকে ব্ৰহ্মর্ষি বলে স্বীকার করলেন না। আবার পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিলেন না বা কোন অভিশাপ দিলেন না ।
বিশ্বামিত্র তখন ঠিক করলেন, বশিষ্ঠকে হত্যা করবেন। একদিন তিনি বশিষ্ঠ যে ঘরে থাকেন, তার পেছনে লুকিয়ে রইলেন ।
সেদিন বশিষ্ঠের ঘরে লবণ ছিল না। বশিষ্ঠের স্ত্রী অরুন্ধতী এসে জানালেন যে লবণ নেই । বশিষ্ঠ তাঁর স্ত্রীকে বিশ্বামিত্রের কাছ থেকে কিছু লবণ নিয়ে আসতে বললেন। অরুন্ধতী বললেন, ছি – ছি- ছি। যে আমাদের শত্রু বলে ভাবে, যে আমাদের এক’শ পুত্রকে হত্যা করিয়েছে, তুমি তাঁর কাছে তুচ্ছ লবণের জন্য আমাকে যেতে বলছ?
বশিষ্ঠ বললেন,
সন্তানের জন্য দুঃখ করো না। যার কাল পূর্ণ হবে মৃত্যু তার হবেই । তোমাদের ছেলেদের কাল পূর্ণ হয়েছিল। তাই তারা মৃত্যুবরণ করেছে—মৃত্যুর কারণ যাই হোক না কেন । বিশ্বমিত্র উপলক্ষ মাত্র। তাছাড়া প্রকৃত জ্ঞানী জীবিত কি মৃত কারও জন্য শোক করেন না। কারণ মৃত্যুতে দেহের বিনাশ ঘটে, আত্মার ধ্বংস নেই। পুত্রদের শোকে তোমার মত আমিও ব্যথিত।
কিন্তু আমি শোকে কাতর হয়ে পড়ছি না—তুমিও কাতর হয়ো না। সম্পদে ও বিপদে স্থির থাকাই সকলের বিশেষ করে সাধকের কর্তব্য। নইলে সাধনা সফল হয় না। বিশ্বামিত্র ব্রহ্মার্ষি রূপে গণ্য হওয়ার স্বীকৃতি চায়। কিন্তু ও এখনও ব্রহ্মর্ষির পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করে নি। তাই আমি ওকে ব্রহ্মর্ষি রূপে স্বীকার করিনি বলে ও ক্রুদ্ধ।
ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ও এমন সব কাজ করছে যাতে আমি কষ্ট পাই। আমি চাই ও ব্রহ্মর্ষি হওয়ার জন্যে আরও সাধনা করুক। যখন সময় হবে, তখন আমি সবার আগে ওকে ব্রহ্মর্ষি বলে স্বীকার করব।
ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠের এ কথা আড়াল থেকে শুনলেন বিশ্বমিত্র।
– এই মহানুভব ব্রহ্মর্ষিকে আমি হত্যা করতে এসেছি! ওঃ, এর শতপুত্রকে আমি হত্যা করিয়েছি! অনুশোচনায় দগ্ধ হতে লাগলেন বিশ্বামিত্র। তিনি ছুটে গিয়ে বশিষ্ঠের পা জড়িয়ে ধরলেন।
– আরে, আরে, কে? কে? এ যে বিশ্বমিত্র! ওঠ, ওঠ। পা না ছেড়ে দিয়ে বিশ্বামিত্র কাঁদতে কাঁদতে বললেন,
– আমি অতি ক্ষুদ্র, আমি ব্রহ্মর্ষি হতে চাই নে। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। – বশিষ্ঠ বিশ্বামিত্রকে হাত ধরে তুললেন। তারপর তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
ওরে, সেই তো মহৎ, যে নিজেকে ক্ষুদ্র বলে ভাবে। আজ তুই ক্রোধ আর অহংকার ত্যাগ করেছিস। আমি তোকে আশীর্বাদ করছি, আজ থেকে তুই ব্রহ্মর্ষি হলি । বশিষ্ঠের কথা শুনে স্তম্ভিত হলেন বিশ্বামিত্র। শ্রদ্ধায়, আনন্দে, বিস্ময়ে তিনি আরেকবার বশিষ্ঠের পায়ে পড়লেন। বশিষ্ঠ পরম স্নেহে বিশ্বামিত্রকে তুলে বুকে টেনে নিলেন ।
সারাংশ
‘বশিষ্ঠের মহানুভবতা’ শীর্ষক পৌরাণিক উপাখ্যানটি মহানুভবতার দৃষ্টান্ত। পুরাকালে রাজর্ষি বিশ্বামিত্র ব্রহ্মার্ষি হতে চেয়েছিলেন। তার জন্য স্বীকৃতি চাই। ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠ যদি স্বীকৃতি দেন, তাহলে কেউ বিশ্বামিত্রকে ব্রহ্মর্ষি বলে মেনে নিতে দ্বিধা করবে না। কিন্তু তখনও পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেন নি বলে বশিষ্ঠ স্বীকৃতি দিলেন না। তখন ক্রুদ্ধ হয়ে বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠের পুত্রদের হত্যা করা সহ অনেক ক্ষতি করেছিলেন।
অবশেষে তিনি গোপনে বশিষ্ঠকে হত্যা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রতি বশিষ্ঠের মমতাময় ও ক্ষমাসুন্দর কথাবার্তা শুনে তিনি মুগ্ধ হলেন। ছুটে গিয়ে ক্ষমা চাইলেন। বিশ্বামিত্র ক্রোধ ও অহংকার ত্যাগ করতে পেরেছেন বলে বশিষ্ঠ তাঁকে ব্রহ্মর্ষি বলে স্বীকৃতি দিলেন। বিশ্বামিত্র শত্রুতা করেছে, চরম ক্ষতি করেছে, তবুও তাঁর প্রতি বশিষ্ঠের এ উদার আচরণে মহানুভবতা প্রকাশ পেয়েছে।
মহানুভবতা নীতিজ্ঞান
মানুষ এক প্রকার জীব। তবে মানুষের বিবেক আছে। আছে ভাল-মন্দের জ্ঞান। ভাল-মন্দের জ্ঞান না থাকলে অন্যান্য জীব বা পশুপাখির সাথে মানুষের কোন পার্থক্য থাকত না। আর মানুষ যখন ভাল-মন্দের জ্ঞান হারিয়ে মন্দ-কাজে লিপ্ত হয়, তখন সে আর মানুষ থাকে না। সে ‘দ্বিপদ’ পশুতে পরিণত হয়। মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, পশু জৈব স্বভাবের বশে এই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
এছাড়া মানুষের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। অপরের দুঃখে তার প্রাণ কাঁদে এবং সমাজে একজন মানুষের আরেকজন মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ বা কর্তব্যবোধ জন্মে। একে অপরের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেয়। তখন মানুষ আর্তের সেবা করে, নিজে না খেয়ে ক্ষুধার্তের মুখে অন্ন জোগায়, বিপদাপন্নের জন্য সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
ক্ষুধার্তের জন্য, পীড়িতের জন্য সত্যিকারের মানুষ যে-কোন রকম ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত থাকে- এমনকি এ জন্য সে প্রাণ ত্যাগ করতেও কুণ্ঠিত হয় না। যে-বোধে উদ্দীপ্ত হয়ে মানুষ অন্য মানুষের বা জীবের সেবা করে, তার নাম মানবতাবোধ । মানবতাবোধ মানুষের ধর্ম—মানুষের গুণ । হিন্দু ধর্মে বলা হয়েছে, ঈশ্বর আত্মারূপে জীবের মধ্যে অবস্থান করেন, তাই জীবকে ভালবাসলে ঈশ্বরকেই ভালবাসা হয়। তাই মানবতাবোধ ধর্মেরও অঙ্গ ।
এখন ধর্মগ্রন্থ থেকে মানবতাবোধ সম্পর্কে একটি উপাখ্যান বলছি :
রন্তিদেবের মানবতাবোধ
অনেক কাল আগের কথা। এক দেশে রন্তিদেব নামে এক রাজা ছিলেন। রন্তিদেব ছিলেন পরম ধার্মিক। প্রজাদের তিনি খুব ভালবাসতেন আর শ্রীকৃষ্ণের শ্রীচরণ ধ্যান করতেন এবং তাঁর আরাধনা করতেন । শ্রীকৃষ্ণের জন্য তাঁর প্রাণ খুব আকুল হয়ে উঠল। তিনি আরম্ভ করলেন কঠোর সাধনা। সাধনার এক পর্যায়ে তিনি অযাচক-বৃত্তি গ্রহণ করলেন।
অযাচক বৃত্তি হচ্ছে, কারও কাছে কিছু যাচ্ঞা করা বা চাওয়া যাবে না। ক্ষুধা পেলে কারও কাছে খাদ্যও চাওয়া যাবে না। ইচ্ছে করে যদি কেউ কিছু দেয়, তবে তা গ্রহণ করা যাবে। অযাচক বৃত্তি গ্রহণের পর রাজা রন্তিদেবের আটচল্লিশ দিন অনাহারে কাটল। তিনিও কারও কাছে কিছু চাননি। কেউ দয়া করেও তাঁকে কিছু খেতে দেয় নি। ঊনপঞ্চাশ দিনে এক ভক্ত তাঁকে কিছু অন্ন আর এক বাটি পায়েস দিয়ে দিলেন।
রাজা খেতে বসলেন। এমন সময় একটি হাড় জিরজিরে লোক এসে দাঁড়াল রাজার সামনে। লোকটির সাথে আবার একটি কুকুর রয়েছে। কুকুরটির অবস্থাও তার প্রভুর মতই- রোগা, কঙ্কালসার চেহারা। লোকটি কাতর কণ্ঠে জানাল :
কদিন ধরে অনাহারে আছি। শুধু আমি নই, আমার কুকুরটাও। ক্ষুধার্ত লোকটির জন্য রাজা রন্তিদেবের মন কেঁদে উঠল। কুকুরটির জন্যও তাঁর খুব মায়া হল । জীবের মধ্যে যে আত্মরূপে ঈশ্বর আছেন! জীবের কষ্ট তো ঈশ্বরের কষ্ট! তিনি নিজের খাবার ঐ লোকটি ও তার কুকুরটিকে দিয়ে দিলেন। একেই বলে মানবতাবোধ।
গভীর মানবতাবোধ ছিল বলেই রাজা রন্তিদেব আটচল্লিশ দিন অনাহারে থেকেও নিজের খাবার অপরকে দিয়ে দিলেন। হঠাৎ এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটল। কোথায় গেল সেই লোকটি আর তার কুকুর! রন্তিদেব দেখলেন তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। আসলে রন্তিদেবের মানবতাবোধের- জীবসেবার পরীক্ষা নিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ । পরীক্ষায় কত নম্বর পেতে পারেন রাজা রন্তিদেব? পূর্ণ নম্বর, তাই না?
সারাংশ
যে বোধে উদ্দীপ্ত হয়ে মানুষ অন্য মানুষ বা জীবের সেবা করে তার নাম মানবতাবোধ । মানবতাবোধ ধর্মেরও অঙ্গ। ‘রন্তিদেবের মানবতাবোধ’ শীর্ষক পৌরাণিক উপাখ্যানে মানবতাবোধের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। অনেক কাল আগে রন্তিদেব নামে কৃষ্ণভক্ত এক রাজা ছিলেন। তিনি কঠোর সাধনার এক পর্যায়ে গ্রহণ করলেন অযাচক বৃত্তি। অযাচক বৃত্তি গ্রহণের পর রাজা রন্তিদেবের আটচল্লিশ দিন অনাহারে কাটল।
ঊনপঞ্চাশ দিনের এক ভক্ত তাঁকে কিছু অন্ন ও পায়েস খেতে দিলেন। রাজা খেতে বসলে একটি অনাহারী লোক নিজের এবং তার ক্ষুধার্ত কুকুরটির জন্য খাবার চাইল । রাজা রন্তিদেব নিজে না খেয়ে তাঁর খাবার ওদের দিয়ে দিলেন। একেই বলে মানবতাবোধ ।
আরও দেখুন :