আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হিন্দু ধর্মের উদ্ভব
হিন্দু ধর্মের উদ্ভব
হিন্দু ধর্মের উদ্ভব
হিন্দু ধর্ম অতি প্রাচীন ধর্ম। এ ধর্মের প্রকৃত নাম সনাতন ধর্ম। সনাতন ধর্মই হিন্দু ধর্ম নামে পরিচিতি লাভ করেছে। ‘সনাতন’ শব্দের অর্থ যা ছিল, যা আছে এবং যা থকবে। আর ‘হিন্দু’ শব্দটি ‘সিন্ধু’ শব্দ থেকে এসেছে। ভারতবর্ষে সনাতন ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে। ভারতবর্ষে বাইরে থেকে আসা আর্য এবং আগে থেকে বসবাসরত দ্রাবিড়, অস্ট্রিক প্রভৃতি নানা জাতি-উপজাতির নানা মত ও নানা পথের সংমিশ্রণ ঘটেছে।
তবে আর্য ঋষিদের দৃষ্ট বেদ সনাতন ধর্মের প্রধান ভিত্তি। বেদদ্রষ্টা ঋষিরা বাস করতেন সিন্ধুনদের তীরে। আফগান প্রভৃতি বিদেশীরা সিন্ধুকে ‘হিন্দ’ রূপে উচ্চারণ করত। বেদে বিশ্বাসী সনাতন ধর্মের অনুসারীদের তারা হিন্দু বলে অভিহিত করত। এদের সনাতন ধর্মকে তারা হিন্দুর ধর্ম বা হিন্দু ধর্ম বলত। এভাবে সনাতন ধর্ম হিন্দু ধর্ম নামে অভিহিত হয়েছে।
বেদ, পুরাণ ও হিন্দু ধর্মের অন্যান্য শাস্ত্রগ্রন্থ অনুসারে যাঁরা জীবন যাপন করেন এবং সনাতন বা হিন্দু ধর্মের কল্যাণকর আদর্শ জীবনে প্রয়োগ করতে সচেষ্ট হন, তাঁদেরকে বলা হয় হিন্দু। আর তাঁদের ধর্মকে বলা হয় হিন্দু ধর্ম।

ঈশ্বর হিন্দুধর্মের মূল । তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তিনি সর্বশক্তিমান এবং তিনিই সকল কিছুর নিয়ন্তা। ঈশ্বরকে পরমাত্মা বলা হয়। তিনিই সকল জীবের স্রষ্টা এবং জীবের আত্মারূপে জীবের মধ্যে অবস্থান করেন । তাই হিন্দু ধর্মে বলা হয়েছে, জীবকে সেবা করলে ঈশ্বরের সেবা করা হয় । জীবের আত্মা পরমাত্মা বা ঈশ্বরেরই অংশ।
পরমাত্মার বিনাশ নেই, তাই হিন্দু ধর্মের একটি বিশ্বাস এই যে, আত্মার বিনাশ নেই। আত্মা অমর, অবিনশ্বর। বিনাশ ঘটে দেহের। আত্মার দেহ- পরিবর্তনই জন্ম ও মৃত্যু। হিন্দু ধর্মে একেই বলা হয়েছে জন্মান্তরবাদ । পুনঃপুন জন্ম হতে হতে এক সময় আর জন্ম হয় না। তখন জীব চিরমুক্তি বা মোক্ষ লাভ করে। ঈশ্বরে বিশ্বাস, আত্মমোক্ষ ও জগতের হিতসাধন হিন্দু ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য।
সারাংশ
হিন্দু ধর্মের প্রকৃত নাম সনাতন ধর্ম। অষ্ট্রিক, দ্রাবিড় এবং আর্য প্রভৃতি জাতি ও উপজাতির নানা মত ও নানা পথের সংমিশ্রণে সনাতন ধর্ম বা হিন্দু ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে। বেদ হিন্দু ধর্মের প্রধান ভিত্তি। ঈশ্বর হিন্দু ধর্মের মূল। আত্মার অবিনশ্বরতা ও মুক্তি, জন্মান্তরবাদ, জীবের হিতসাধন ও ঈশ্বর-জ্ঞানে জীবসেবা হিন্দু ধর্মের কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আরও দেখুন :