আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় স্বৰ্গ ধর্মদর্শন
স্বৰ্গ ধর্মদর্শন
স্বৰ্গ ধর্মদর্শন
শুভ কর্মের পুণ্যময় ফল ভোগ করার জন্য মানুষ মৃত্যুর পর যে সুখময় স্থান লাভ করে তাকে স্বর্গ বলে। পাপকর্মের ফল ভোগ করার জন্য কর্মকর্তাকে নরক ভোগ করতে হয়। শ্রুতিতে বলা হয়েছে, স্বর্গ কামনা করে যজ্ঞ করবে। স্বর্গ কামনা করে যজ্ঞাদি করলে তার ফলে স্বর্গ লাভ হয়। স্বর্গে সুখভোগ হয়। সুখভোগের জন্য স্বর্গলোক নির্দিষ্ট হয়ে রয়েছে। সেখানে রোগ, শোক, জ্বরা, ব্যাধি নেই, আছে শুধু সুখ ।
স্বর্গ দেবতাদের বাসস্থান। দেবতাদের রাজা ইন্দ্র স্বর্গে বাস করেন। ইন্দ্র যে প্রাসাদে বাস করেন তার নাম বৈজয়ন্ত । ইন্দ্রের বাহন হল হাতি, হাতিটির নাম ঐরাবত। ইন্দ্রের দেবসভার নাম সুধর্ম । স্বর্গের উদ্যানের নাম নন্দনকানন, নদীর নাম মন্দাকিনী। স্বর্গের রাজধানী অমরাবতী। পারিজাত পুষ্পের সুরভিতে স্বর্গ আমোদিত।
স্বর্গবাসীদের ভোগের সামগ্রী হল সুরভী গাভীর দুগ্ধ এবং স্বর্গের অমৃতময় খাদ্য। স্বর্গে জীব চিরকাল অবস্থান করতে পারে না। পুণ্য ফলে স্বর্গবাস হয়, কিন্তু ভোগের মধ্যে দিয়ে পুণ্য ক্ষয় হয়। পুণ্য ক্ষয় হলে স্বর্গ ভোগের অবসান হয়। আর জীবকে পুনরায়
মর্ত্যলোকে দেহধারণ করে জন্মগ্রহণ করতে হয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবের দেহ নষ্ট হয়।

তখন কর্মফল ভোগের জন্য তার সূক্ষ্ম দেহের উদ্ভব ঘটে। ঐ সূক্ষ্ম দেহ নিয়েই জীব স্বর্গসুখ বা নরক যন্ত্রণা ভোগ করে থাকে। কোন ব্যক্তি মৃত্যুর পরে স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, এ ব্যাপারে শাস্ত্রের নির্দেশ হচ্ছে-
তাঁরাই স্বর্গে যেতে পারবেন, যাঁরা সকল হিংসা ত্যাগ করেছেন, যাঁরা সহিষ্ণু হয়ে সব কিছু সহ্য করেন। যারা সকলের প্রতিপালন করেন। মোট কথা, পুণ্যবান ব্যক্তি মাত্রই স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকেন।
সারাংশ
পুণ্যময় কর্মের ফল ভোগ করার স্থান স্বর্গ। স্বর্গ কামনা করে যজ্ঞ করা উচিত। যজ্ঞাদি সৎ কর্মের ফল স্বর্গলাভ ।
আরও দেখুন :