আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় শিবরাত্রি ব্রত
Table of Contents
শিবরাত্রি ব্রত
শিবরাত্রি ব্রত
কোন বিশেষ মনস্কামনা সিদ্ধির মানসে যে পূজাদি ধর্মানুষ্ঠান করা হয়, তাকে ব্ৰত বলা হয়। ‘শিবরাত্রি’ একটি ব্রতানুষ্ঠান ।
স্কন্দপুরাণে বলা হয়েছে, মাঘ মাসের শেষে বা ফাল্গুন মাসের প্রথমে কৃষ্ণপক্ষের যে চতুর্দশী তাকেই শিবচতুর্দশী বলে জানবে। অর্থাৎ মাঘী পূর্ণিমার পরের চতুর্দশীই শিবচতুর্দশী। পূর্বদিনে রাত্রিযোগে চতুর্দশী তিথি না পড়লে, যদি পরের দিন সন্ধ্যায় চতুর্দশী তিথি পড়ে, তা হলে পরের দিনই শিবরাত্রির ব্রত হবে।
শিবরাত্রিতে উপবাসই প্রধান কর্তব্য। শিব নিজেই বলেছেন, স্নান, বস্ত্র, ধূপ বা পুষ্পাদি অৰ্চনা করলে আমি যতটা সন্তুষ্ট হই, একমাত্র উপবাস করলে তার চেয়ে বেশি সন্তুষ্ট হই।
শিবরাত্রির ব্রতপদ্ধতি
আচমন, স্বস্তিবাচন প্রভৃতি নিত্যক্রিয়া সমাধা করার পর সংকল্প করতে হবে। এরপর সামান্যার্ঘ্য স্থাপন করে গণেশাদি দেবতার পূজা করে শিব পূজা করতে হয়। শিবের প্রতিষ্ঠিত প্রতীক পূজা করলে বিসর্জন নেই। তবে মৃত্তিকা নির্মিত হলে চক্ষুদান, প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও বিসর্জন প্রভৃতি যথানিয়মে করতে হবে।
চার প্রহরে চারবার পূজা এবং শিব প্রতীককে জল দিয়ে ‘ওঁ পশুপতয়ে নমঃ’ বলে স্নান করাতে হবে। পরে বিশেষ দ্রব্যে স্নান করাতে হবে। প্রথম প্রহরে দুগ্ধ দ্বারা ‘ওঁ হৌং ঈশানায় নমঃ’-এ মন্ত্র উচ্চারণ করে শিব প্রতীককে স্নান করাতে হবে। দ্বিতীয় প্রহরে দধি দ্বারা ‘ওঁ হৌং অঘোরায় নমঃ’-এ মন্ত্রে স্নান করাতে হবে।
তৃতীয় প্রহরে ঘৃত দ্বারা ‘ওঁ হৌং রাম দেবায় নমঃ’—এ মন্ত্রে স্নান করাতে হবে এবং চতুর্থ প্রহরে মধু দ্বারা ‘ওঁ হৌং সদ্যোজাতায় নমঃ’ এই শিব-প্রতীককে স্নান করাতে হবে। প্রতি প্রহরের পূজার বিশেষ বিশেষ মন্ত্র আছে। পূজা শেষে শিব পূজায় বিশেষ ব্রত কথা শোনা, স্তবাদি পাঠ এবং রাত্রি জাগরণ করতে হবে। পরের দিন স্নানাদি করে যথানিয়মে পারণ বা ভোজন করতে হয় ।
শিবের প্রণামমন্ত্ৰ
নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হেতবে ।
নিবেদয়ামি চাত্মানং গতিত্ত্বং পরমেশ্বর।
সরলার্থ :
মঙ্গলময়, শান্ত এবং সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশ- এই কারণ ত্রয়ের হেতু শিবকে নমস্কার। তাঁর কাছে নিজেকে নিবেদন করছি। হে পরমেশ্বর, তুমিই আমার গতি ।
সারাংশ
কোন বিশেষ মনস্কামনা সিদ্ধির মানসে যে পূজাদি ধর্মানুষ্ঠান করা হয়, তাকে ব্রত বলে। শিবরাত্রি একটি ব্রতানুষ্ঠান। মাঘী পূর্ণিমার পরের চতুর্দশীতে শিবরাত্রির ব্রত করা হয়। শিবরাত্রিতে | উপবাসই প্রধান কর্তব্য। পূজানুষ্ঠানের চেয়ে উপবাসেই শিব বেশি সন্তুষ্ট হন।
আচমন, স্বস্তিবাচনাদি নিত্যক্রিয়ার পর বিশেষভাবে যথানিয়মে শিবের পূজা করতে হয়। অতঃপর ব্রত কথা শোনা ও স্তবাদি পাঠ ও রাত্রি জাগরণ করতে হবে। পরের দিন স্নান করে যথানিয়মে পারণ করতে হবে।
আরও দেখুন :